[email protected] মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫
৬ শ্রাবণ ১৪৩২

নিরুপায় মায়ের চোখের সামনেই মরছে ক্ষুধার্ত শিশু!

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১ জুলাই ২০২৫ ১৭:০৭ পিএম

ফাইল ছবি

ফিলিস্তিনের গাজার কেন্দ্রীয় হাসপাতালের চিকিৎসকরা প্রতি ঘণ্টায় অপুষ্টির রোগী পাচ্ছেন। গাজা শহরের একটি ৩৫ দিনের শিশু ও দেইর এল-বালাহতে চার মাস বয়সী এক শিশু আল-আকসা শহীদ হাসপাতালে অপুষ্টিতে মারা গেছে।

হাসপাতালে এক মা তাঁর সন্তানের শরীর ছুঁয়ে আর্তনাদ করছিলেন, ‘আমি দুঃখিত, আমি তোমাকে খাওয়াতে পারিনি। আমার চোখের সামনে তোমাকে মরতে দেখা ছাড়া আমার আর কোনো উপায় ছিল না।’ প্রতিনিয়ত শিশুদের এমন মৃত্যু দেখতে হচ্ছে গাজার মায়েদের। 

এই দুটি ঘটনাই কেবল নয়। হাসপাতালের চিকিৎসকদের মতে, প্রতি ঘণ্টায় অপুষ্টিতে ভোগা শিশু ভর্তি হচ্ছে হাসপাতালে। 

শিশুদের অনাহার থেকে বাঁচাতে বাবা-মায়েরা মার্কিন-ইসরায়েলের তৈরি জিএইচএফ বিতরণ কেন্দ্রে যেতে বাধ্য হন। কারণ, তাদের সামনে আর কোনো বিকল্প নেই। বাবা-মায়েরা বলছেন, নারী-শিশুসহ তারা সবাই ক্ষুধার্ত এবং তারা নিজ সন্তানদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করতে অক্ষম। অনেক শিশুকে শুধুই পানি খাইয়ে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা হচ্ছে। কারণ, আটা কেনার সাধ্য তাদের নেই। 

ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ সতর্ক করে দিয়েছে, ইসরায়েল গাজায় পরিকল্পিতভাবে বেসামরিক নাগরিকদের অনাহারে রাখছে, যাদের মধ্যে ১০ লাখ শিশুও রয়েছে। খাদ্য নিতে আসা ক্ষুধার্তদের ওপর প্রতিদিন গুলি করছে দখলদার বাহিনী। গত মে মাসের শেষ দিকে বিএইচএফ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে প্রায় ৯০০ ত্রাণপ্রত্যাশীকে হত্যা করা হয়েছে। 

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় ৫৪ ত্রাণপ্রত্যাশীসহ কমপক্ষে ১৩০ জন নিহত এবং ৪৯৫ জন আহত হয়েছেন। গত ২১ মাসে দখলদার বাহিনীর হামলায় এ পর্যন্ত ৫৮ হাজার ৮৯৫ জন ও ১ লাখ ৪০ হাজার ৯৮০ জন আহত হয়েছেন।

গাজা এখন যেনকারবালার প্রান্তর

কারবালার প্রান্তরে এজিদের বাহিনী ইমাম হুসাইনের শিবির অবরোধ করে ফোরাত নদীর পানি সরবরাহ যেমন বন্ধ করে দিয়েছিল, ঠিক একই কৌশলে গাজার পানি সরবরাহ ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরায়েল। আর ইসরায়েল সৃষ্টি সেই কারবালার প্রান্তরে নির্মমভাবে প্রাণ হারাল দুই সহোদর।

নয় বছর বয়সী কারাম তার ছোট্ট হাতে পাত্র নিয়ে যাচ্ছিল পরিবারের জন্য একটুখানি পানি সংগ্রহের আশায়। এ সময় ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র তার দেহকে ছিন্নভিন্ন করে দিল। ১০ বছর বয়সী বোন লানা ছুটে এসেছিল ছোট ভাইকে সাহায্য করতে। কিন্তু ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র তার দেহও ছিন্নভিন্ন করে দিল। 

সোর্স: সমকাল 

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর