মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতক শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঘোষিত রায়কে ঘিরে তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় একাধিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। সম্প্রতি রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, রায়টি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং তার মা বর্তমানে ভারতের সুরক্ষায় নিরাপদে আছেন। জয়ের দাবি, ভারত শেখ হাসিনাকে পূর্ণ নিরাপত্তা দিচ্ছে, তাই রায়ের পরও তার তৎক্ষণাৎ কোনো ঝুঁকি নেই।
জয় সতর্ক করে বলেন, আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকলে দলীয় নেতাকর্মীরা ফেব্রুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠেকিয়ে দিতে পারে। তার ভাষ্যে, “আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার পর থেকেই দেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে প্রভাবশালী দল। তাদের নিষিদ্ধ রেখে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।” তিনি আরও বলেন, প্রয়োজন হলে আন্দোলন আরও ব্যাপক হবে এবং আন্তর্জাতিক মহল নীরব থাকলে সহিংসতা বাড়তে পারে।
এর আগে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে দেওয়া আরেক সাক্ষাৎকারে জয় জানান, নিষিদ্ধ দলকে রাজনীতিতে ফিরে আসার সুযোগ দিতে হবে এবং নির্বাচনী পরিবেশ হতে হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অংশগ্রহণযোগ্য। তিনি অভিযোগ করেন, যা কিছু বর্তমানে ঘটছে, তা আসলে শেখ হাসিনা ও তাদের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা দেওয়ার কৌশল।
ওয়াশিংটন ডিসি থেকে তিনি আরও বলেন, “আমার মায়ের কোনও ক্ষতি করতে পারবে না কেউ। তিনি ভারতে নিরাপদে আছেন।” একই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা যদি কার্যক্রম স্থগিত অবস্থায় থাকে, তাহলে কোনো নির্বাচনই শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হবে না।
অন্যদিকে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকবে, কারণ তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী ও মানবতা বিরোধী অপরাধের তদন্ত চলছে। সরকারের এক মুখপাত্র সজীব ওয়াজেদের সতর্কবার্তাকে “দায়িত্বজ্ঞানহীন ও সহিংসতায় উস্কানিমূলক” বলে অভিহিত করেন।
রায় ঘোষণার পর ঢাকায় ক্রমশ অস্থিরতা বাড়ছে। গত কয়েক দিনে রাজধানীতে একাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটেছে। ১২ নভেম্বর শহরজুড়ে ৩২টি বিস্ফোরণ এবং বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও রেকর্ড হয়েছে। এসব নাশকতার অভিযোগে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সামগ্রিকভাবে পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে, আর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।
মন্তব্য করুন: