[email protected] বৃহঃস্পতিবার, ১ মে ২০২৫
১৮ বৈশাখ ১৪৩২

ঝিনাইদহে ৩ জনকে গুলি করে হত্যা, দায় স্বীকার করে খুদে বার্তা!

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৩:০২ পিএম

গ্রাফিক্স

আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব। দীর্ঘদিনের এ বিরোধ ঠেকে অস্ত্রের ভয়ংকর খেলায়। আর প্রাণ হারান একে একে তিনজন। শুধু তাই নয়, হত্যার পর গণমাধ্যমকর্মীদের খুদে বার্তাও পাঠায় খুনি। এমনকি দেওয়া হয় শেষ পরিণতির হুমকিও।

ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের শৈলকুপায়। শুক্রবার রাতে উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের শ্মশানঘাট এলাকায় তিনজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

নিহতরা হলেন- হরিণাকুণ্ডু উপজেলার আহাদনগর গ্রামের রাহাজ উদ্দীনের ছেলে আবু হানিফ ওরফে হানিফ আলী, তার শ্যালক শ্রীরামপুর গ্রামের উম্মাদ আলীর ছেলে লিটন ও কুষ্টিয়া ইবি থানার পেয়ারপুর গ্রামের আরজেদ আলীর ছেলে রাইসুল ইসলাম। এর মধ্যে হানিফ পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির আঞ্চলিক নেতা ছিলেন।

স্থানীয় বাসিন্দা মাসুদ রানা বলেন, রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিন থেকে চারটি গুলির শব্দ শুনতে পান লোকজন। এতে ভয়ে আর কেউ ঘর থেকে বের হননি। পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কয়েক ঘণ্টা পর রাত সাড়ে ১১টার দিকে এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনটি লাশ ও দুটি মোটরসাইকেল পড়ে থাকতে দেখেন। পরে পুলিশে খবর দেন তারা।

হত্যাকাণ্ডের পরই দায় স্বীকার করে গণমাধ্যমকর্মীদের হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠিয়েছেন জাসদ গণবাহিনীর কালু। তার বাড়ি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পশ্চিম আব্দালপুর গ্রামে।

খুদে বার্তায় বলা হয়, ‘ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, কুষ্টিয়া, যশোর ও খুলনাবাসীর উদ্দেশে জানানো যাচ্ছে যে, পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি নামধারী কুখ্যাত ডাকাত বাহিনীর শীর্ষ নেতা অসংখ্য খুন, গুম, দখলদারী, ডাকাতি, ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত হরিণাকুণ্ডুনিবাসী হানিফ তার দুই সহযোগীসহ জাসদ গণবাহিনীর সদস্যদের হাতে নিহত হয়েছেন। তাদের লাশ রামচন্দ্রপুর ও পিয়ারপুর ক্যানালের পাশে রাখা আছে। এই অঞ্চলের হানিফের সহযোগীদের শুধরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো। অন্যথায় আপনাদের একই পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে।’

পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন ধরে কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে জাসদ গণবাহিনীর দ্বন্দ্ব চলছিল। শুক্রবার রাতে রামচন্দ্রটুর শ্মশানঘাট এলাকায় পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের গোপন বৈঠকের খবর পায় প্রতিপক্ষ বাহিনী। এরই জেরে কালুর নেতৃত্বে ওই তিনজনকে হত্যা করা হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।

শৈলকুপা থানার ওসি মাসুম খান বলেন, রাত সাড়ে ১১টার দিকে বেশ কিছু গুলির শব্দ শুনতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে ঘটনাস্থল থেকে তিনটি লাশ উদ্ধার করা হয়। একই সঙ্গে দুটি মোটরসাইকেল, গুলি ও ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়েছে।

ওসি বলেন, হানিফের বিরুদ্ধে হত্যাসহ ১৩টি মামলা রয়েছে। ২০০৩ সালের ৫ ডিসেম্বর একই স্থানে পাঁচজনকে হত্যা করা হয়। হরিণাকুণ্ডু উপজেলার কুরবাড়িয়া গ্রামের আব্দুর রহমান হত্যা মামলায় তাকে ফাঁসির রায় দেয় আদালত। উচ্চ আদালতে এ রায় বহাল থাকলেও সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের বিশেষ ক্ষমা নিয়ে এলাকায় ফিরে আসেন তিনি।

সোর্স: আমার দেশ

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর