গ্রামবাংলায় এক রহস্যময় পাখি আছে কেউ বলে আইড়া মুরগি, কেউ ডাকাত পাখি, আবার কারও কাছে যমকুলি। তার প্রকৃত নাম কানাকুয়ো বা কুবো। এই পাখিকে ঘিরে আছে নানা কুসংস্কার ও কিংবদন্তি ডাকে অমঙ্গল হয়, ঘরে মৃত্যু আসে। কিন্তু বাস্তবে সে ভয়ংকর এক শিকারি।
কোকিল পরিবারের এই সদস্য তার জীবনের বড় অংশ কাটায় ঝোপঝাড়ে, বাঁশবনে। আলো পছন্দ নয়, অন্ধকারই তার রাজত্ব। কুবো বাসা বানিয়ে ডিম পাড়ে, অন্য কোকিলের মতো পরের বাসায় ডিম পাড়ে না।
লেখক একবার দেখেছেন, একটি কুবো সাপের সাথে মুখোমুখি। প্রায় চার ফুট লম্বা গোখরার সঙ্গে লড়াইয়ে নামে সে। ঠোকর, নখের আঁচড় আর বারবার আক্রমণে শেষমেশ কুবোই জেতে ঘাড় মটকে মেরে ফেলে সাপটিকে, তারপর খায়।
এদের খাদ্যতালিকায় আছে শামুক, গিরগিটি, ইঁদুর, ব্যাঙ ও নানা ধরনের সাপ বিষধর চন্দ্রবোড়া হোক বা নির্বিষ ঢোঁড়া, কারও রেহাই নেই। কুবোর ছানাদের জন্যও আনা হয় সাপ।
গ্রামে একসময় বিশ্বাস ছিল, প্রসূতি মায়েদের 'সুতিকা' রোগ সারাতে কুবোর মাংস জরুরি। তাই কুবো শিকারের জন্য মানুষ ছুটে যেত।
ভয়ের ডাক, লাল চোখ, শিকারি স্বভাব সব মিলিয়ে কানাকুয়োকে ঘিরে আছে রহস্য, ভয় ও বিস্ময়। বাস্তবতা হলো, এই পাখি প্রকৃতির এক অসাধারণ যোদ্ধা যাকে বুঝতে গেলে ভয় নয়, জানতে হবে গভীরভাবে।
মন্তব্য করুন: