জাপানের “কিনমেমাই প্রিমিয়াম” শুধু একটি চাল নয়—এটি এক অনন্য অভিজ্ঞতা। ২০১৬ সালে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে দামি চাল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এই চালের প্রতিটি দানা যেন নিখুঁত যত্নে গড়া একেকটি শিল্পকর্ম।
হংকংয়ের ‘সুশি ফুজিমোতো’ রেস্তোরাঁর মালিক ও শেফ কেনিচি ফুজিমোতো প্রথমবার এই চালের স্বাদ নিতে গিয়ে ছিলেন সন্দিহান। কিন্তু রান্নার পর তিনি স্বীকার করেন—এতে এমন গভীর স্বাদ ও সুবাস আছে, যা আগে কোনো চালে পাননি। তাঁর ভাষায়, “ভালো সুশির ৮০ শতাংশ নির্ভর করে চালের উপর।”
ওয়াকায়ামা ভিত্তিক তোয়ো রাইস কর্পোরেশনের প্রেসিডেন্ট কেইজি সাইকা, যিনি বর্তমানে ৯১ বছর বয়সী, এই চালের উদ্ভাবক। জাপানি চালের গুণাগুণ বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরতেই তিনি ‘কিনমেমাই প্রিমিয়াম’ তৈরি করেন। “কিনমেমাই” অর্থ “সোনালী অঙ্কুরিত চাল”—যা পুষ্টিগুণ ও স্বাদের দিক থেকে অনন্য।
প্রতি বছর মাত্র ১,০০০ বাক্স উৎপাদিত হয়, যার প্রতিটির দাম প্রায় ১০,৮০০ ইয়েন বা ৭৩ ডলার। বাজারে আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সব বিক্রি হয়ে যায়। অথচ সাইকা স্বীকার করেন—এই চাল থেকে তারা প্রকৃত অর্থে লাভ করেন না। তাঁর লক্ষ্য ছিল জাপানি কৃষকদের উৎসাহ দেওয়া এবং বিশ্বের কাছে জাপানি চালের শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরা।
দীর্ঘ গবেষণা ও আধুনিক প্রযুক্তির ফল এই চাল শুধু এক খাবার নয়—এটি জাপানের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও উদ্ভাবনের প্রতীক। “কিনমেমাই প্রিমিয়াম” তাই এক অনন্য উদাহরণ—যেখানে সাধারণ চালও বিলাসিতার গল্প বলে।
মন্তব্য করুন: