 
                                                                        
                                    আমরা হাই তুলি কেন? গবেষণায় দেখা গেছে, এটি শুধু বেশি অক্সিজেন নেওয়া বা কার্বন ডাই অক্সাইড বের করার জন্য নয়। ১৯৮০-এর দশকে স্বেচ্ছাসেবীদের শ্বাসের গ্যাস নিয়ন্ত্রণ করে পরীক্ষা করা হয়েছিল, কিন্তু হাই তোলার সংখ্যা পরিবর্তিত হয়নি।
পৃথিবীর সব মেরুদণ্ডী প্রাণী হাই তোলে—বেবুন, ওরাংওটাং, টিয়া, পেঙ্গুইন, কুমির এমনকি প্রাচীন চোয়ালওয়ালা মাছও। তবে হাই তোলার প্রকৃত কারণ দীর্ঘদিন রহস্য ছিল।
জনস হপকিন্সের অধ্যাপক অ্যান্ড্রু গ্যালাপ মনে করেন, হাই তোলা মাথার রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং মস্তিষ্ককে শীতল রাখতে সাহায্য করে। চোয়াল প্রসারিত করে গভীর শ্বাস নেওয়া মাথার ধমনীতে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি করে, তারপর দ্রুত শ্বাস ছাড়ার সময় রক্ত আবার হৃৎপিণ্ডে ফিরে আসে। এছাড়া, ঠান্ডা বাতাস মুখ, জিভ ও নাকের আর্দ্র অংশ দিয়ে মস্তিষ্কের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
হাই তোলা মস্তিষ্কের সচেতন অবস্থাও পরিবর্তন করে, যেমন ঘুম থেকে জাগা বা একঘেয়েমি থেকে সতর্ক হওয়া। ‘সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড’ সঞ্চালনে সাহায্য করে এবং মস্তিষ্ককে আঘাত থেকে রক্ষা করে।
এছাড়া হাই তোলা সংক্রামক। অন্যকে হাই তুলতে দেখলে আমরা তা অনায়াসে নকল করি। এটি গোষ্ঠীতে সতর্কতা ও সমন্বয় বাড়ায়। সিংহ ও বেবুনের ওপর গবেষণায় দেখা গেছে, একজন প্রাণীর হাই তোলা অন্যদেরও সক্রিয় করে।
অতএব, হাই তোলা শুধু শ্বাস-প্রশ্বাসের কাজ নয়। এটি মস্তিষ্কের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সামাজিক সংযোগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই পরবর্তীবার হাই তোলার সময় ভাববেন না আপনার মস্তিষ্ক আপনাকে ভালো রাখার জন্য কাজ করছে।
মন্তব্য করুন: