চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে মারধরের ঘটনায় শুরু হওয়া সংঘর্ষ দফায় দফায় রক্তক্ষয়ী রূপ ধারণ করেছে। শিক্ষার্থী ও পাশের জোবরা গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে চলমান এই সংঘর্ষে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংবাদিক ও স্থানীয় বাসিন্দাসহ কয়েকশ আহত হয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, ৪০০ থেকে ৫০০ শিক্ষার্থী এই সংঘর্ষে আহত হয়েছেন।
গত শনিবার রাত সোয়া ১১টার দিকে দর্শন বিভাগের এক ছাত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন ভবনের দারোয়ান মারধর করেন। ছাত্রীরা অভিযোগ করেন, দারোয়ান তাদের ওপর অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে, ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে লাথিও মারে। পরবর্তীতে অভিযুক্ত দারোয়ানকে আটক করতে গেলে স্থানীয়রা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় জড়ো হওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর দেশীয় অস্ত্র ও ইটপাটকেল নিয়ে জোবরা গ্রামের শতাধিক ব্যক্তি হামলা চালায়। এ ঘটনার পর রাতভর সংঘর্ষ চলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাত ৩টার দিকে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। তবে পুলিশের কোনো উপস্থিতি ছিল না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রবিবার সকাল থেকে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠে। দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরিস্থিতি সামলাতে গেলে স্থানীয়রা তাদের ওপরও হামলা চালায়। ছাত্রলীগের কিছু ক্যাডারও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে।
সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহতের সংখ্যা কয়েকশে পৌঁছেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রক্টরসহ কিছু কর্মকর্তা ও সাংবাদিকরাও আহত হয়েছেন।
হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন বিকেলে ১৪৪ ধারা জারি করে। সোমবার রাত ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ১৪৪ ধারা কার্যকর থাকবে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
অভিযুক্তদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র ও নিরাপত্তা দপ্তর থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হেলমেট, দা, কিরিচ সহ অন্যান্য সরঞ্জাম দিয়ে সংঘর্ষ আরও জটিল হয়েছে। শনিবার রাত থেকে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে এলাকায় ব্যাপক ভাঙচুর ও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।
তবে গতকাল বিকেলে ক্যাম্পাসে সেনাবাহিনী প্রবেশ করলে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে।
মন্তব্য করুন: