২০২৫ সালের শুরুতে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দেশটিতে ব্যাপকভাবে বহিষ্কার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দেশটির ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) বিভাগ জানায়, প্রথম ছয় মাসেই তারা প্রায় দেড় লাখ মানুষকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের পথে রয়েছে।
এরইমধ্যে অন্তত ১৮০ বাংলাদেশিকে জোরপূর্বক ফেরত পাঠানো হয়েছে। সেপ্টেম্বরে পাঠানো একটি বিশেষ ফ্লাইটে ছিলেন ৩০ জন বাংলাদেশি। তাদের একজন, রবিউল ইসলাম জানান, পুরো ফ্লাইটটি ছিল যেন একটি চলন্ত কারাগার। যাত্রাপথে তাদের হাত, কোমর ও পা শক্ত শিকলে বাঁধা ছিল। এমনকি খাবার খাওয়ার সময়ও হাতকড়া খোলা হয়নি। অন্য যাত্রীদের সাহায্যে মুখে খাবার তুলতে হয়েছে।
একই বিমানে ছিলেন সিলেটের মাসুদ আহমেদ। যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময় তাকে গর্ভবতী স্ত্রী থেকে আলাদা করে ফেলা হয়। পরে তাদের মেয়ে জন্ম নিলেও তিনি মেয়েকে এক নজরও দেখতে পারেননি। যদিও মাসুদ ও তার স্ত্রী দুজনই ব্রাজিলের নাগরিকত্ব পেয়েছিলেন এবং বৈধভাবে মধ্য আমেরিকা পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন, তারপরও তাকে জোর করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়। এমন অমানবিক আচরণকে ‘অপমানজনক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন তিনি।
অনেকেই জানাচ্ছেন, এ ধরনের অভিযানে শুধু অবৈধ অভিবাসীরা নয়, আশ্রয়প্রার্থী কিংবা বৈধভাবে থাকা ব্যক্তিরাও শিকার হচ্ছেন। মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, এই পদ্ধতিতে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করা হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক আইন এবং মানবাধিকারের সম্পূর্ণ লঙ্ঘন। তাদের মতে, এই ঘটনাগুলো জাতিসংঘে তুলে ধরা জরুরি, কারণ এটি শুধু ব্যক্তির অধিকার নয়, বরং বাংলাদেশের মর্যাদারও প্রশ্ন। যুক্তরাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখতে গিয়ে বহু বাংলাদেশির জীবন আজ শিকলে বাঁধা দুর্দশায় পরিণত হয়েছে।
মন্তব্য করুন: