ভারতের মহারাষ্ট্রের বীড জেলার মানুষ এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার সাক্ষী হলো। মৃত ঘোষণার প্রায় ১২ ঘণ্টা পর বেঁচে উঠলো এক নবজাতক। বিরল এ ঘটনায় স্থানীয় একটি সরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনার সূত্রপাত গত ৭ জুলাই। বীডের স্বামী রামানন্দ তীর্থ সরকারি হাসপাতালে মাত্র ২৭ সপ্তাহের গর্ভধারণের পর এক অন্তঃসত্ত্বা প্রসব করেন। শিশুটির ওজন ছিল মাত্র ৯০০ গ্রাম। ওইদিন রাত ৮টা নাগাদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সদ্যোজাতকে ‘মৃত’ ঘোষণা করে এবং পরিবারের হাতে তার মরদেহ তুলে দেয়। এরপর শোকাহত পরিবার শিশুটির দেহ নিয়ে বাড়িতে ফিরে যায়।
পরদিন সকালে শিশুটির শেষকৃত্যের আয়োজন চলছিল। সেই সময় শিশুটির দাদি শেষবারের মতো তার মুখ দেখতে চাইলে ঘটে অলৌকিক ঘটনা। শিশুটির মুখ থেকে চাদর সরাতেই সে কেঁদে ওঠে! এই অপ্রত্যাশিত ঘটনায় সবাই স্তম্ভিত হয়ে যান। এরইমধ্যে শিশুটি দ্বিতীয়বার কেঁদে উঠলে পরিবারের সদস্যরা দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে ছোটেন।
শিশুটির পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, পরদিন সকাল ৭টা নাগাদ এই ঘটনা ঘটে, অর্থাৎ মৃত ঘোষণার প্রায় ১২ ঘণ্টা পর ‘বেঁচে’ ওঠে ‘মৃত’ ঘোষিত শিশুটি।
এই ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চরম উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন শিশুটির পরিবারের সদস্যরা। শিশুটির দাদু সখারাম ঘুঘে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে ফোন করে বলা হয়েছিল শিশুটি মৃত। এরপরে আমরা সকলে গিয়ে শিশুটিকে নিয়ে আসি। শেষকৃত্যের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। এমন সময় কেঁদে ওঠে শিশুটি। এটা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে হয়েছে।
শিশুটির মা বলিকা ঘুঘে জানান, প্রসবের পর নার্স বলেছিল তোমার সন্তান বেঁচে নেই। কিন্তু কবর দিতে যাওয়ার আগে কেঁদে ওঠে শিশুটি।
তবে এই ঘটনায় নিজেদের দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের ডিন রাজেশ কাছরে বলেন, অত্যন্ত দুর্বল অবস্থায় জন্ম নিয়েছিল শিশুটি। হৃদস্পন্দন, শ্বাসপ্রশ্বাস পাওয়া যাচ্ছিল না। তাছাড়া বেঁচে থাকার কোনো চিহ্ন ছিল না। সেই কারণেই মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে শিশুটিকে পুনরায় হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা চলছে এবং এই ঘটনার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সোর্স: যুগান্তর
মন্তব্য করুন: