 
                                                                        
                                    পৃথিবীতে এমন এক পাখি ছিল, যার একটিমাত্র পালক দিয়ে বিলাসবহুল গাড়ি কেনা যেত। নিউজিল্যান্ডের এই বিলুপ্ত পাখির নাম হুয়িয়া। কালো দেহ, লম্বা লেজের ডগায় সাদা উজ্জ্বল কিনারা, দেখতে এটি ছিল এক রাজকীয় সৌন্দর্যের প্রতীক। বৈজ্ঞানিক নাম হেটেরালোচা আকুটিরোস্ট্রিস। একসময় নিউজিল্যান্ডের পাহাড়ি বনভূমিতে হুয়িয়া উড়ে বেড়াত, কিন্তু মানব লোভ, শিকার এবং বন উজাড়ের কারণে ১৯০৭ সালের দিকে সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে যায়।
হুয়িয়ার পালক শুধু সাজসজ্জার উপকরণ ছিল না, বরং মাওরি জনগোষ্ঠীর রাজা-মহারাজা ও গোত্রপ্রধানদের জন্য মর্যাদা ও আভিজাত্যের প্রতীক। মুকুট, পোশাক ও অলংকারে এই পালক ব্যবহার হত, যা তাদের কাছে আধ্যাত্মিক মর্যাদার চিহ্নও ছিল।
বিলুপ্তির পর হুয়িয়ার পালক হয়ে ওঠে কিংবদন্তি। ২০১০ সালে ওয়েলিংটনের এক নিলামে একটি পালক বিক্রি হয় ৮,৪০০ নিউজিল্যান্ড ডলারে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬ লাখেরও বেশি। অর্থাৎ প্রায় ৫,০০০ মার্কিন ডলার মূল্যের একটি পালক পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে দামি পালক হিসেবে রেকর্ড গড়ে।
দামের কারণ তিনটি,
এক,
হুয়িয়া সম্পূর্ণ বিলুপ্ত; 
দুই, 
মাওরি সংস্কৃতিতে এটি রাজকীয় ঐতিহ্যের প্রতীক; 
তিন, 
নিউজিল্যান্ড সরকার এটি জাতীয় ঐতিহ্য হিসেবে সংরক্ষণ করেছে।
একসময় রাজাদের মাথায় শোভা পাওয়া এই পালক এখন জাদুঘরের কাচের বাক্সে রাখা। এটি স্মরণ করিয়ে দেয়, প্রকৃতির সৌন্দর্য যত মূল্যবানই হোক, একবার হারালে তা আর ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়।
মন্তব্য করুন: