 
                                                                        
                                    শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে হাজার হাজার পরিযায়ী পাখি দক্ষিণের উষ্ণ দেশে পাড়ি জমায়, যার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম গন্তব্য। উত্তর গোলার্ধের বরফময় অঞ্চলে খাদ্য ও আবহাওয়া সীমিত হয়ে গেলে, পাখিরা উষ্ণ ও খাদ্যসমৃদ্ধ অঞ্চলে চলে যায়। বসন্তে তারা আবার দীর্ঘ দিনের আলো ও নিরাপদ প্রজননের জন্য উচ্চ অক্ষাংশে ফিরে আসে।
বাংলাদেশে নদী, হাওর, বিল, উপকূল ও দ্বীপপালা পরিযায়ী পাখিদের জন্য অনন্য আশ্রয়। টাঙ্গুয়ার হাওরে এক সমীক্ষায় দেখা গেছে ৫১,০০০-এর বেশি পাখি, অন্তত ৩৫ প্রজাতির। সাম্প্রতিক গণনায় পাঁচটি অঞ্চলে মোট ২ লাখ ৪৬ হাজারেরও বেশি পাখি আসে। কমন কুট, পিনটেল ডাক, রেড-ক্রেস্টেড পচার্ড, স্পুন-বিল্ড স্যান্ডপাইপার ইত্যাদি বাংলাদেশের আকাশ ও হাওর ভরিয়ে রাখে।
পাখির এই দীর্ঘ যাত্রা কৌশলপূর্ণ। তারা সূর্য, তারা, পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র এবং মেরুকৃত আলো ব্যবহার করে পথ নির্দেশনা পায়। স্যাটেলাইট ট্র্যাকিং ও রিং-এর মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা তাদের এই চমকপ্রদ যাত্রার রহস্য উদঘাটন করেছেন।
কিছু নজিরবিহীন যাত্রা অন্তর্ভুক্ত – বার-টেইলড গডউইট ১১,০০০ কিমি অটল উড়ান, আমুর ফ্যালকন ৩,০০০ কিমি সমুদ্র অতিক্রম, হুপার সোয়ান V-আকৃতিতে পরিবারসহ উড়ান, এবং গ্রেটার ফ্লেমিংগো চাঁদের আলোতে জলের প্রতিফলন অনুসরণ করে।
এই অতিথি পাখিরা আমাদের শীতের কোমল উপহার। তবে তাদের শিকার আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত করলে বাংলাদেশের প্রকৃতি ও পরিযায়ী পাখিরা আগামী প্রজন্মের জন্য টিকে থাকবে।
মন্তব্য করুন: