[email protected] সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫
৫ শ্রাবণ ১৪৩২

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন

পঞ্চগড়-২ আসনে সরব বিএনপি, এনসিপি ও জামায়াতের একক প্রার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০ জুলাই ২০২৫ ২০:০৭ পিএম

বাঁ থেকে পঞ্চগড়-২ আসনের বিএনপি প্রার্থী ফরহাদ হোসেন আজাদ, জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী সফিউল্লাহ সুফি এবং এনসিপির সম্ভাব্য প্রার্থী শিশির আসাদ।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পঞ্চগড়-২ (বোদা-দেবীগঞ্জ) আসনে প্রেচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। দেশে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পেয়েছে সাধারণ জনগণ, ফলে তাদের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে ব্যাপক আগ্রহ।

এরই মধ্যে মাঠে নেমে পড়েছেন উক্ত আসনের জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) একক প্রার্থীরা। বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে প্রার্থীরা জনগণের সামনে নিজেদের অবস্থান ও পরিকল্পনা তুলে ধরছেন।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, পঞ্চগড়-২ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৯৪১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯৫ হাজার ৭১০ জন, নারী ভোটার ১ লাখ ৯৪ হাজার ২২৮ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ৩ জন।

এই আসনে ১৯৮৬ সালে নির্বাচিত হন কমিউনিস্ট পার্টির নেতা কমরেড ফরহাদ। এরপর ধারাবাহিকভাবে ১৯৮৮, ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করেন বিএনপির মোজাহার হোসেন। তবে ২০০৮ সাল থেকে এই আসনে দৃঢ় অবস্থান গড়ে তোলেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী নুরুল ইসলাম সুজন, যিনি ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালের নির্বাচনে টানা বিজয়ী হন।

জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও পল্লী উন্নয়ন সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ এবারের নির্বাচনে দলের একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়ে মাঠে নেমেছেন পুরোদমে।

অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে ঘোষিত প্রার্থী সফিউল্লাহ সুফিও সক্রিয় রয়েছেন মাঠে।

এনসিপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে জনগণকে আকর্ষিত করেছেন সমাজসেবক ও লেখক, দলটির জেলা সংগঠক শিশির আসাদ।

এ ছাড়া এই আসনে জাসদ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নেতা এমরান আল আমিনও সক্রিয়ভাবে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন।

নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে গিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন প্রার্থীরা।

ফরহাদ হোসেন আজাদ বলেন,“পতিত স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের আমলে যারা মাঠে থেকে দলীয় কর্মসূচি পালন করেছেন এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছেন—তাদের মধ্য থেকেই দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে। দল যাকে মনোনয়ন দেবে, আমরা সবাই তার পক্ষেই কাজ করব।”

শিশির আসাদ বলেন,“আমরা ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের একটি পার্ট। জনগণ আমাদের নতুন শক্তি হিসেবে দেখছে। আমরা সুসংগঠিতভাবে মাঠে নেমেছি। আশা করছি, জনগণ আমাদের ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে।”

সফিউল্লাহ সুফি বলেন,“এই এলাকা জামায়াত ঘাঁটি এলাকা। আমরা জনগণের ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি এবং জনগণ আমাদের সাড়া দিচ্ছে। ইনশাআল্লাহ আমরা জয়ী হব।”

অন্যদিকে ভোটারদের মধ্যে নির্বাচন ঘিরে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভোটার জানান, “তিনজন প্রার্থীই নিজেদের অবস্থান থেকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আমরা আগেও বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের শাসন দেখেছি। এবার মানুষ ভিন্ন কিছু চায়। তরুণ প্রার্থী শিশির আসাদ যেভাবে জনগণের সঙ্গে মিশছেন, তাতে আমরা তার পক্ষেই দাঁড়াতে চাই।”

স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আসন্ন নির্বাচনে পঞ্চগড়-২ আসনে তিনটি শক্তিশালী পক্ষের মধ্যে কড়া লড়াই হতে পারে। বিশেষ করে তরুণ ভোটারদের একটি বড় অংশ প্রচলিত রাজনীতির বাইরে গিয়ে নতুন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে আস্থা রাখতে শুরু করেছে।

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর