১৯৮৬ সালের ২৬ এপ্রিল ইউক্রেনের চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের রিয়্যাক্টর-৪ বিস্ফোরিত হয়ে সৃষ্টি করে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ পারমাণবিক দুর্ঘটনা। মুহূর্তেই চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে তেজস্ক্রিয়তা, যা শুধু কেন্দ্র নয়, আশপাশের শহর প্রিপিয়াতকেও করে তোলে মৃত্যুপুরী।
প্রায় ৫০ হাজার মানুষের শহর প্রিপিয়াত এক রাতেই পরিণত হয় ভূতুড়ে শহরে। স্কুল, হাসপাতাল, সিনেমা হল, শিশু পার্ক—সবকিছুই আছে, কিন্তু সবই আজ ধ্বংসস্তূপ। বিখ্যাত অ্যামিউজমেন্ট পার্কের ফেরিস হুইলটি চালু হওয়ার আগেই থেমে যায়, এখন মরিচা ধরা অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে।
দুর্ঘটনার ৩৬ ঘণ্টা পর বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হলেও তখন জানা ছিল না, তারা আর ফিরতে পারবে না। বিজ্ঞানীরা জানান, তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা এতটাই বেশি যে কয়েক শতাব্দী পর্যন্ত বসবাস নিরাপদ নয়।
চেরনোবিল থেকে নির্গত তেজস্ক্রিয়তা ছিল হিরোশিমা-নাগাসাকির চেয়েও ৪০০ গুণ বেশি। এর প্রভাবে ইউরোপজুড়ে লাখো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
আজ প্রিপিয়াত সীমিত পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত, যেখানে সময় যেন থেমে আছে। পর্যটকদের ডোজিমিটার নিয়ে প্রবেশ করতে হয়, তেজস্ক্রিয়তা মাপার জন্য। মানুষের অনুপস্থিতিতে সেখানে ফিরেছে বন্যপ্রাণী, জন্ম নিয়েছে এক নতুন প্রাকৃতিক জগত।
চেরনোবিল আজ শুধু এক মৃত শহর নয়, এটি প্রযুক্তির সীমা, অবহেলার মূল্য ও প্রকৃতির প্রতিশোধের এক জীবন্ত উদাহরণ।
মন্তব্য করুন: