 
                                                                        
                                    তিস্তা নদী নিয়ে বাংলাদেশে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। ১৯ অক্টোবর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শত শত শিক্ষার্থী মশাল হাতে মানববন্ধন করে দাবি তুলেছেন—তিস্তা মাস্টারপ্ল্যান অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে।
৪১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নদী বাংলাদেশের ছয়টি উত্তরাঞ্চলীয় জেলার কৃষির প্রধান জলের উৎস ছিল। এখন শুষ্ক মৌসুমে পানির ঘাটতিতে লাখো কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আন্তর্জাতিক খাদ্যনীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইএফপিআরআই) জানায়, পানির অভাবে বাংলাদেশ প্রতিবছর প্রায় ১৫ লাখ টন ধান উৎপাদন হারায়।
১৯৮৩ সালে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে একটি অন্তর্বর্তী চুক্তিতে তিস্তার পানির ৩৯ শতাংশ ভারতের এবং ৩৬ শতাংশ বাংলাদেশের ভাগে পড়লেও তা কখনো বাস্তবায়িত হয়নি। ২০১১ সালে নতুন চুক্তির উদ্যোগ নেওয়া হলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর বিরোধিতায় আলোচনা থেমে যায়।
এই অচলাবস্থায় বাংলাদেশ চীনের সঙ্গে ৫০ বছরের “তিস্তা রিভার কম্প্রিহেনসিভ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রেস্টোরেশন প্রজেক্ট” (TRCMRP) চুক্তি করছে। চীন প্রকল্পে ২১০ কোটি ডলার সহায়তা দেবে—যার আওতায় নদী খনন, বাঁধ, সড়ক ও স্যাটেলাইট শহর নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
তবে ভারতের উদ্বেগ বাড়ছে, কারণ প্রকল্প এলাকা ভারতের কৌশলগত ‘শিলিগুড়ি করিডর’ বা ‘চিকেনস নেক’-এর কাছে অবস্থিত। নয়াদিল্লির আশঙ্কা, এতে চীনের উপস্থিতি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, তিস্তা এখন শুধু পানিবণ্টনের প্রশ্ন নয়—এটি পরিণত হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার এক নতুন ভূরাজনৈতিক শক্তি-সংঘর্ষের কেন্দ্রে।
মন্তব্য করুন: