[email protected] বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
২৬ ভাদ্র ১৪৩২

ইলিশের বিস্ময়কর জীবনচক্র: নদী থেকে সাগর, আবার নদীতে ফিরে আসা

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৮:০৯ পিএম

ছবি : সংগৃহীত

ইলিশকে বলা হয় মাছের মধ্যে ‘উচ্চবর্ণের ব্রাহ্মণ’। এর স্বাদ, ঘ্রাণ ও বৈশিষ্ট্য একে আলাদা করে তোলে। তবে শুধু এর স্বাদই নয়, ইলিশের জীবনচক্রও এক রহস্যময় বিস্ময়। বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশের জন্ম হয় নদীতে, বেড়ে ওঠা সাগরে, আবার প্রজননের জন্য ফিরে আসে সেই নদীতেই।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইলিশ সাধারণত পদ্মা, মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীর মতো মিঠা পানির নদীতে ডিম দেয় অক্টোবর-নভেম্বরে। এরপর ছোট ইলিশ বা জাটকা নদীতে প্রায় ছয়-সাত মাস থাকে, কারণ এ সময় নদীর লবণাক্ততা, তাপমাত্রা ও খাবারের পরিমাণ ছোট মাছের জন্য উপযোগী থাকে।

তবে বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নদীতে খাদ্য সংকট দেখা দেয়। ২০১৪ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, সাগরে ইলিশের খাদ্যভাণ্ডার অনেক বেশি  যেমন: প্ল্যাঙ্কটন, ক্রিল ও ছোট মাছ, যা তাদের দ্রুত বৃদ্ধি ও প্রজননে সহায়তা করে। সাগরের পরিবেশও অপেক্ষাকৃত শান্ত ও বিস্তৃত, যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও রোগের ঝুঁকি কম।

ইলিশ দলবদ্ধভাবে সাগরে পাড়ি দেয়, সাধারণত অমাবস্যা বা পূর্ণিমার সময়। গবেষণায় দেখা গেছে, চাঁদপুর অঞ্চল থেকে রওনা দিলে তিন দিনের মধ্যে তারা সাগরের মোহনায় পৌঁছে যায় এবং প্রায় এক বছর পর আবার নদীতে ফিরে আসে প্রজননের উদ্দেশ্যে।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে, ইলিশ সাধারণত ১ বছরের মাথায় প্রজননের জন্য পরিপক্ব হয়, তবে বিশেষ পরিবেশে ৮-১০ মাসেও হতে পারে। ইলিশের গড় আয়ু প্রায় সাত বছর হলেও বাজারে দেখা মেলে দুই থেকে তিন বছর বয়সী বড় ইলিশের।

মৎস্য বিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ আনিছুর রহমান বলেন, ইলিশের এই নদী-সাগর অভিবাসন প্রক্রিয়া তাদের টিকে থাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এদের জীবনচক্রের প্রতিটি ধাপ প্রকৃতির সঙ্গে গভীরভাবে সংযুক্ত যা শুধু বৈজ্ঞানিকভাবেই নয়, সাংস্কৃতিকভাবেও এক অনন্য দৃষ্টান্ত।

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর