হ্যালোইন, আজ বিশ্বের নানা দেশে আনন্দ, সাজগোজ ও রহস্যের উৎসব হলেও, এর শুরুটা ছিল ভয় ও বিশ্বাসে ঘেরা এক প্রাচীন আচার থেকে। প্রায় দুই হাজার বছর আগে ইউরোপের কেল্টিক জনগোষ্ঠী ৩১ অক্টোবর উদযাপন করত ‘স্যামহেইন’, যেদিন ফসল কাটার মৌসুম শেষ হয়ে শুরু হতো দীর্ঘ শীত। তাদের বিশ্বাস ছিল, এই রাতে জীবিত ও মৃতের জগতের সীমারেখা ভেঙে যায়, মৃতদের আত্মা ফিরে আসে পৃথিবীতে।
ভয় ও অশুভ আত্মার হাত থেকে রক্ষা পেতে কেল্টরা জ্বালাত আগুন, পরত পশুর চামড়ার মুখোশ, আর মৃত আত্মাদের শান্ত রাখতে দরজায় রাখত খাবার। অষ্টম শতাব্দীতে খ্রিস্টধর্ম ছড়িয়ে পড়ার পর ১ নভেম্বরকে “অল সেন্টস ডে” ঘোষণা করা হয়, আর তার আগের রাতটি হয় ‘অল হ্যালোজ ইভ’, যা সময়ের সঙ্গে “হ্যালোইন”-এ রূপ নেয়।
হ্যালোইনের সবচেয়ে বিখ্যাত প্রতীক জ্যাক-ও’-ল্যান্টার্ন এসেছে আয়ারল্যান্ডের লোককথা “স্টিঞ্জি জ্যাক” থেকে। মৃত্যুর পর অন্ধকারে ঘুরে বেড়ানো জ্যাক হাতে রাখত এক জ্বলন্ত কয়লা, যা সে রাখত ফাঁপা শালগমে। পরে আমেরিকায় শালগমের জায়গা নেয় মিষ্টিকুমড়ো।
আয়ারল্যান্ডে পরিবারগুলো “ডাম সাপার” নামে এক নৈশভোজ করত, যেখানে ফাঁকা চেয়ার থাকত মৃত প্রিয়জনদের জন্য। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভয় মিলিয়ে যায়, জায়গা নেয় উৎসবের। শিশুদের “ট্রিক-অর-ট্রিটিং” থেকে শুরু করে পোশাক-পরিচ্ছদের উৎসবে পরিণত হয় হ্যালোইন। আজ এটি শুধু আমেরিকা নয়, সারা বিশ্বের এক রহস্যময় আনন্দের দিন।
মন্তব্য করুন: