 
                                                                        
                                    মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘ইভেন্টউড’ এমন এক ধরনের কাঠ তৈরি করেছে, যার শক্তি ইস্পাতের চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি এবং ওজন ছয় গুণ কম। নতুন এই কাঠের নাম দেওয়া হয়েছে ‘সুপারউড’, যা ইতোমধ্যে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করেছে কোম্পানিটি।
‘সুপারউড’ তৈরির ধারণাটি এসেছিল উপাদান বিজ্ঞানী লিয়াংবিং হু–এর গবেষণা থেকে। তিনি বর্তমানে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হলেও এই গবেষণার সূচনা করেন মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করার সময়। হু কাঠের মূল উপাদান সেলুলোজ-এর রাসায়নিক গঠন পরিবর্তনের মাধ্যমে কাঠের দৃঢ়তা ও স্থায়িত্ব বাড়াতে সক্ষম হন।
প্রক্রিয়াটি বেশ অভিনব। কাঠকে প্রথমে একটি নির্দিষ্ট রাসায়নিক দ্রবণে পানির সঙ্গে ফুটিয়ে নেওয়া হয়, পরে তাপ ও চাপ প্রয়োগ করে কোষীয় স্তরগুলো ঘন করা হয়। ফলে কাঠের ঘনত্ব বাড়ে, কাঠ আরও মজবুত হয় এবং একে ধাতব শক্তির প্রতিদ্বন্দ্বী করে তোলে।
এভাবে উন্নত প্রক্রিয়ায় তৈরি সুপারউড স্বাভাবিক কাঠের তুলনায় ২০ গুণ বেশি শক্তিশালী, ১০ গুণ বেশি ক্ষয়প্রতিরোধী, এবং ছত্রাক, পোকামাকড় এমনকি আগুন প্রতিরোধেও কার্যকর। এটি পরিবেশবান্ধব, কারণ সাধারণ ইস্পাত তৈরির তুলনায় সুপারউড তৈরি করতে প্রায় ৯০ শতাংশ কম কার্বন নিঃসরণ হয়।
ইভেন্টউড বর্তমানে সুপারউডকে বাড়ির বহিরাংশে (যেমন দেয়াল, ডেকিং, ক্ল্যাডিং) ব্যবহারের জন্য বাজারজাত করছে। ভবিষ্যতে এটি আসবাব ও অভ্যন্তরীণ নকশায় ব্যবহারের পরিকল্পনাও রয়েছে।
ইন্টারউড-এর সিইও অ্যালেক্স লাউ জানান, সুপারউড দিয়ে তৈরি ভবনগুলো চার গুণ হালকা হয়, যা ভূমিকম্প প্রতিরোধে সহায়ক। যদিও এর উৎপাদন খরচ এখনো কিছুটা বেশি, তবে দীর্ঘমেয়াদে এটি টেকসই ও পরিবেশবান্ধব বিকল্প হিসেবে কাজ করবে।
মন্তব্য করুন: