[email protected] বৃহঃস্পতিবার, ১ মে ২০২৫
১৮ বৈশাখ ১৪৩২

ঝুঁকিতে ২০০ কোটি মানুষের খাদ্য ও পানি সরবরাহ

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩ মার্চ ২০২৫ ১৩:০৩ পিএম

সংগৃহীত

বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় অবিশ্বাস্য গতিতে গলছে হিমবাহ। এভাবে চলতে থাকলে তা অপ্রত্যাশিত পরিণতি ডেকে আনবে। দ্রুতগতিতে এ হিমবাহ গলা বিশ্বজুড়ে ২০০ কোটি মানুষের খাদ্য ও পানি সরবরাহ ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে।

সম্প্রতি জাতিসংঘ এক প্রতিবেদনে সতর্ক করে এসব কথা জানায়। খবর গার্ডিয়ানের।

ইউনেস্কোর প্রতিবেদনে বলা হয়, হিমবাহের ক্ষয়ের কারণে সেচের ওপর নির্ভরশীল বিশ্বের মোট দুই-তৃতীয়াংশ কৃষি জমি কোনো না কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি জলবায়ু সংকটের কারণে পাহাড়ি অঞ্চলে তুষারপাত কমে যাচ্ছে।

প্রায় ১০০ কোটি মানুষ পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাস করে উল্লেখ করা হয়েছে এ বছরের ওয়ার্ল্ড ওয়াটার ডেভেলপমেন্ট রিপোর্টে। এতে বলা হয়, উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি মানুষ ইতিমধ্যেই খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন হচ্ছেন। এটি আরো খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কেননা এসব অঞ্চল খাদ্য উৎপাদনের জন্য পাহাড়, তুষার ও হিমবাহ থেকে গলা পানির ওপর নির্ভরশীল।

এ অবস্থায় উন্নয়নশীল দেশ শুধু নয় উন্নত দেশও ঝুঁকিতে রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা হয়, কলোরাডো নদীর অববাহিকা ২০০০ সাল থেকে খরার কবলে রয়েছে। আর উচ্চ তাপমাত্রার অর্থ হলো বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া, যা পাহাড়ি তুষারের চেয়ে দ্রুত পতিত হয় এবং তা খরা পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তোলে।

ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ওদ্রে আজুলে বলেন, আমরা যেখানেই বাস করি না কেন সবাই কোনো না কোনো ক্ষেত্রে পাহাড় ও হিমবাহের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু এই প্রাকৃতিক জলাধারগুলো আসন্ন বিপদের মুখোমুখি। এই প্রতিবেদনটি জরুরি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।

গত মাসে বিশ্বের অন্যতম সম্মানজনক সাময়িকী নেচারে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি যদি নিয়ন্ত্রণ করা না যায় তাহলে এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ পৃথিবীর অর্ধেক হিমবাহ গলে যাবে।

ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক জরিপের হিমবাহ ভূ-পদার্থবিদ অ্যালেক্স ব্রিসবোর্ন বলেন, পাহাড়ি হিমবাহ পৃথিবীর মিঠা পানির অন্যতম উৎস। এসব উৎস থেকে গ্রীষ্মকালে যে পানি গলে তা ১০০ কোটি মানুষের পানির চাহিদা মেটায় এবং বিপুল পরিমাণে শিল্প ও কৃষিকে টিকিয়ে রাখে। দ্রুতগতিতে হিমবাহ গললে এর প্রভাব বহুদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে যাবে।

এমন পরিস্থিতিতে দুর্গত পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের জন্য আরো সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্টের প্রেসিডেন্ট এবং ইউএন-ওয়াটারের সভাপতি আলভারো লারিও। তিনি বলেন, পাহাড় আমাদের স্বাদু পানির ৬০% সরবরাহ করে, কিন্তু যেসব সম্প্রদায় এই গুরুত্বপূর্ণ সম্পদের সুরক্ষা করে তারা সবচেয়ে বেশি খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে। সবার জন্য সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে হিমবাহ ও নদী রক্ষা করতে আমাদের অবশ্যই তাদের স্থিতিস্থাপকতায় বিনিয়োগ করতে হবে।

সোর্স: আমার দেশ



মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর