[email protected] বৃহঃস্পতিবার, ১ মে ২০২৫
১৮ বৈশাখ ১৪৩২

জুলাই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় লীগ সরকারের সাজানো মামলা ৩৫

ক্রাইম ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৫ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:০১ এএম

ফাইল ছবি

জুলাই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজধানীতে অন্তত ৩৫টি মামলা করেছিল তৎকালীন পুলিশ। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে করা ওই সব সাজানো মামলায় হত্যার দায় চাপানো হয়েছিল বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের ওপর। এখন পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, হত্যার ঘটনার সঙ্গে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীরা জড়িত নন।

অবশ্য এসব সাজানো ৩৫ মামলায় উঠে আসা ৬২ জন হত্যায় কারা জড়িত, তা পুলিশ  বের করতে পারেনি। খুনিদের শনাক্ত করতে না পেরে সম্প্রতি সেই সব মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। আইনজীবী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, আওয়ামী লীগ সরকার জুলাই হত্যাকাণ্ডে নিজেদের দায় এড়াতে বিএনপি ও জামায়াতের ওপর দোষ চাপিয়ে পুলিশকে দিয়ে মামলা করিয়েছিল। সেসব মামলা থেকে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের অব্যাহতি দেওয়া গ্রহণযোগ্য। কিন্তু হত্যাকাণ্ডে কারা জড়িত, তা শনাক্ত করতে না পারাটা অগ্রহণযোগ্য।

মামলার বিচার হয় পুলিশের দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদন বা অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে। অভিযোগপত্রের বদলে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার অর্থ হলো, আদালত আবার তদন্তের নির্দেশ না দিলে এই মামলার তদন্ত স্থগিত থাকবে। আইনজ্ঞরা বলছেন, দোষী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করাই পুলিশের কাজ। কিন্তু সেই কাজ সম্পন্ন না করে মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ায় প্রশ্ন উঠবে।

এই ৩৫ মামলার মধ্যে ৯টির চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও দলের অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা জড়িত বলে প্রতীয়মান হয়। সেই নেতা-কর্মী কারা, তা–ও তদন্ত কর্মকর্তা বের করতে পারেননি। জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) মো. ফারুক হোসেন বলেন, আইন অনুযায়ী তদন্ত করে এসব মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। আদালত প্রতিবেদনগুলো গ্রহণ করেছেন।

তখন দায় চাপানো হয় বিএনপি-জামায়াতের ওপর

২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণ-অভ্যুত্থানে ৮২৬ জন শহীদের তথ্য প্রথম ধাপের তালিকায় (১ জানুয়ারি) প্রকাশ করেছে গণ-অভ্যুত্থানসংক্রান্ত বিশেষ সেল। এসব হত্যার ঘটনায় ৫ আগস্টের আগে তৎকালীন সরকারের পুলিশ ঢাকায় অনেকগুলো মামলা করে। মামলাগুলোতে দায়ী করা হয় বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের। সেটা ছিল নিজেদের দায় ‘আড়াল করার চেষ্টা’। তখন নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরাও বলেছিলেন, মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের গুলিতে।

অবশ্য ৩৫ মামলায় উঠে আসা ৬২ জন হত্যায় কারা জড়িত, তা পুলিশ বের করতে পারেনি। খুনিদের শনাক্ত করতে না পেরে সম্প্রতি সেই সব মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।

গত ১ আগস্ট ‘মানুষের মৃত্যু সন্ত্রাসীদের গুলিতে, বলছে পুলিশ’ শিরোনামে প্রথম আলোতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ঢাকায় পুলিশের করা ৩৪টি মামলার বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়েছিল। বেশির ভাগ মামলার এজাহারের শেষাংশে বর্ণনা ছিল প্রায় একই রকম। বলা হয়েছিল, বিএনপি ও জামায়াত এবং তাদের অঙ্গসংগঠনের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের নির্দেশে সন্ত্রাসী অথবা দুষ্কৃতকারীরা আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য ও মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পুলিশকে আক্রমণ করে। হত্যার ঘটনা ঘটেছে কোটা সংস্কার আন্দোলনের আড়ালে থাকা সন্ত্রাসী বা দুষ্কৃতকারীদের গুলিতে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়। এরপর নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরাও মামলা করেছেন। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার হচ্ছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পুলিশ বাদী হয়ে করা ৩৫টি মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে গত অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বরে।

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের পুলিশ আওয়ামী লীগ ও দলের অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের বাঁচাতে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে তখন মামলা করেছিল। মামলা দায়ের ছিল ত্রুটিপূর্ণ। যেহেতু শেখ হাসিনার পতনের পর স্বজন হারানো পরিবারগুলোর অনেকে আদালতে মামলা করেছেন, সেগুলোর তদন্ত চলমান, সেহেতু পুলিশের আগের করা মামলাগুলোর চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।

তবে চূড়ান্ত প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, অন্তত ৬টি মামলায় পুলিশ বলেছে, ভবিষ্যতে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের নাম, ঠিকানা ও তথ্যপ্রমাণ পাওয়া মামলা পুনরুজ্জীবিত করা হবে। এগুলো হলো রামপুরা থানায় দায়ের করা রাকিব হোসেন (২৩), মারুফ হোসেন (২০) ও সোহাগ (১৯) হত্যা মামলা; যাত্রাবাড়ী থানার আরিফ (১৮), রবিউল ইসলামসহ (২৭) চারজনকে হত্যা মামলা; উত্তরা পশ্চিম থানার রাকিব (২২) হত্যা মামলা; ভাটারা থানার গনি শেখ (৪৫), হান্নান (২২) ও মনির হোসাইন (২৮) হত্যা মামলা; বাড্ডা থানার হাসান (১৮) হত্যা মামলা এবং কদমতলী থানার মাসুদ (৪০) হত্যা মামলা। চারটি মামলার ক্ষেত্রে একই ঘটনায় আরেক মামলা থাকার কথা বলেছে পুলিশ।

ফৌজদারি আইনবিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিস্তৃত তদন্ত না করে মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, হত্যা মামলায় ঠিকমতো তদন্তই মূল কথা। সেটা না হলে ন্যায়বিচার পাওয়ার সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে যায়।

শেখ হাসিনা সরকারের পুলিশ আওয়ামী লীগ ও দলের অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের বাঁচাতে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে তখন মামলা করেছিল। মামলা দায়ের ছিল ত্রুটিপূর্ণ। যেহেতু শেখ হাসিনার পতনের পর স্বজন হারানো পরিবারগুলোর অনেকে আদালতে মামলা করেছেন, সেগুলোর তদন্ত চলমান, সেহেতু পুলিশের আগের করা মামলাগুলোর চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।

এই দুষ্কৃতকারীরা কারা
এসব মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, অন্তত চারটি হত্যা মামলার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অথবা দুষ্কৃতকারীদের এলোপাতাড়ি গুলিতে’ বা ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীদের গুলিতে’ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মামলাটি চারটি যাত্রাবাড়ী থানার। সেগুলো হলো ইমাম হাসান হত্যা, জাকির হোসেন ও ইমন হত্যা (দুই ঘটনায় এক মামলা); সোহাগ হত্যা ও সাকিব হত্যা মামলা।

পুলিশের পক্ষ নিয়ে দুষ্কৃতকারীদের গুলিতেও হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে আরও অন্তত চারটি মামলায়। এর মধ্যে একটি হলো যাত্রাবাড়ী থানায় জিহাদ হোসেন (২২) ও ইব্রাহীম (১৩) হত্যার ঘটনায় করা মামলা। এই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনে পুলিশ বলেছে, ‘কোটা আন্দোলনকারীদের সপক্ষে ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও মিছিলকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীরা হেলমেট, মাস্ক-মুখোশ পরে পুলিশের পক্ষ নিয়ে গুলি করে। এতে জিহাদ ও ইব্রাহীম মারা যান।’ একই রকম কারণ উল্লেখ করা হয়েছে যাত্রাবাড়ী থানার রুহান, জাফর হাওলাদার এবং কদমতলী থানার আবদুল আহাদ হত্যা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনে।

কিন্তু পুলিশের পক্ষ নিয়ে হামলাকারী এই দুর্বৃত্তরা কারা, তাদের শনাক্ত করতে পারেননি তদন্তকারীরা।

কোন থানা থেকে কত চূড়ান্ত প্রতিবেদন
সম্প্রতি ৩৫টি মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে, তার ১২টি যাত্রাবাড়ী থানার। এসব মামলায় ২৮ জন নিহতের তথ্য রয়েছে। গত ২৮ ও ২৯ অক্টোবর ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলাগুলোর চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। কদমতলী ও বাড্ডা থানা-পুলিশ চারটি করে, লালবাগ ও মোহাম্মদপুর তিনটি করে, মিরপুর ও রামপুরা দুটি করে, সূত্রাপুর, বনানী, ভাটারা, ধানমন্ডি ও উত্তরা পশ্চিম থানা-পুলিশ একটি করে মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

গত ১৭ জুলাই যাত্রাবাড়ীতে গুলিতে নিহত হন ইমরান নামের এক ব্যক্তি। ২৭ জুলাই এ ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করে পুলিশ। তিন মাস তদন্ত করে পুলিশ ইমরান হত্যায় জড়িত কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি। মামলাটিতে গত ২৮ অক্টোবর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় যাত্রাবাড়ী থানা-পুলিশ। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, বাদী (পুলিশ কর্মকর্তা) এজাহারে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের দায়ী করেছিলেন, যার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। দুষ্কৃতকারীদের গুলিতে ইমরান নিহত হয়েছেন। সাক্ষ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় মামলাটি মুলতবি না রেখে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হলো।

সিএমএম আদালত পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গত ৪ নভেম্বর গ্রহণ করেছেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, তিনি অনেক চেষ্টা করেও ইমরান হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে পারেননি।

এমন ১২টি মামলার তদন্ত কর্মকর্তাদের ভাষ্যও মোটামুটি একই। তা হলো ৫ আগস্টের আগে হওয়া মামলাগুলোতে ভুল তথ্যের ভিত্তিতে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের আসামি করা হয়েছিল। পরে তদন্তে বিএনপি ও জামায়াতের কারও জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু কাদের গুলিতে আন্দোলনকারীসহ এসব মানুষ মারা গিয়েছিলেন, সেটি শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

গত ১৮ জুলাই বাড্ডার কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী হাসানকে (১৮) গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাড্ডা থানার এসআই হারুন-অর-রশিদ প্রথম আলোকে ২৮ ডিসেম্বর বলেন, ভবিষ্যতে তথ্য পাওয়া গেলে মামলাটি আবার পুনরুজ্জীবিত করা হবে।

ওয়াসিমের বোন তামান্না খাতুন বলেন, তাঁর ভাইয়ের খুনের ঘটনায় পুলিশ আলাদাভাবে মামলা করেছিল কি না, সেটা তাঁর জানা নেই। তাঁর ভাইকে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়। গুলি মাথায় আটকে ছিল। এখন পর্যন্ত পুলিশ তাঁর ভাইয়ের রক্তমাখা পোশাকটি জব্দ করেনি।

চূড়ান্ত প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে থানা পুড়িয়ে দেওয়ায় মামলা-সংশ্লিষ্ট আলামত নষ্টের কথা বলেছে পুলিশ। যেমন যাত্রাবাড়ী ও ভাটারা থানা থেকে দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনে থানায় আগুনে নথি ও আলামত নষ্টের কথা বলা হয়েছে।

অবশ্য স্বজন হারানো পরিবারের কেউ কেউ বলছেন, পুলিশ ঠিকমতো তদন্তই করেনি। যেমন ১৮ জুলাই যাত্রাবাড়ীতে সাতজন নিহত হন। তাঁদের একজন ওয়াসিমের বোন তামান্না খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ভাইয়ের খুনের ঘটনায় পুলিশ আলাদাভাবে মামলা করেছিল কি না, সেটা তাঁর জানা নেই। তাঁর ভাইকে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়। গুলি মাথায় আটকে ছিল। এখন পর্যন্ত পুলিশ তাঁর ভাইয়ের রক্তমাখা পোশাকটি জব্দ করেনি।

ফৌজদারি আইনজীবী আমিন গণি বলেন, যেকোনো খুনের ঘটনায় আলামত জব্দ করা অত্যন্ত জরুরি। কারণ, খুনের মামলা প্রমাণ করতে গেলে আলামত থাকতে হয়।

‘হত্যায় আওয়ামী লীগ’, তবে নাম নেই
অন্তত ৯টি মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনে পুলিশ বলেছে, তদন্তে প্রতীয়মান হয় হত্যাকাণ্ডে আওয়ামী লীগ ও দলের অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা জড়িত। কিন্তু জড়িত কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।

১৯ জুলাই সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের টাউন হল মার্কেটের পশ্চিম পাশে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় রাকিব হাসান (১০)। এ মামলায় গত ৬ নভেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ। তাতে বলা হয়, সেদিন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের (বর্তমানে নিষিদ্ধঘোষিত) নেতা-কর্মীদের আক্রমণে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসান মারা যায়।

মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক সহিদুল ওসমান ২৮ ডিসেম্বর প্রথম আলোকে বলেন, হাসান হত্যাকাণ্ডে সুনির্দিষ্ট করে কারও নাম তিনি জানতে পারেননি।

‘কারা খুনে জড়িত, শনাক্ত করা জরুরি’
ফৌজদারি অপরাধে এজাহারে যা-ই লেখা থাকুক না কেন, মামলার বাদী যে-ই হোন না কেন, পুলিশের দায়িত্ব হলো তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধী খুঁজে বের করা এবং অপরাধ প্রমাণের জন্য আলামত ও সাক্ষ্য-প্রমাণ জোগাড় করা ও ফরেনসিক পরীক্ষা করা।

আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আবদুল মতিন বলেন, মানুষ তো খুন হয়েছে। কারা খুনের সঙ্গে জড়িত, সেটি শনাক্ত করা জরুরি। এই কাজের দায়িত্ব পুলিশের। যেসব মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে, আদালত চাইলে পুনঃ তদন্তের আদেশ দিতে পারেন।

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর