রাজধানী ঢাকায় দিন দিন বেড়েই চলেছে সাপের উপদ্রব। বর্ষাকালে গ্রামাঞ্চলে সাপের আনাগোনা স্বাভাবিক হলেও এবার নগরীর বহুতল ভবনেও নিয়মিত সাপ পাওয়া যাচ্ছে। সম্প্রতি উত্তরার একটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ভয়ংকর খৈয়া গোখরা। বাংলাদেশ অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের (বিএডব্লিউএ) রেসকিউ টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে সাপটি উদ্ধার করে।
সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, গত তিন মাসে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে উদ্ধার হয়েছে ৩২২টি সাপ, যার মধ্যে ৩১৯টি বিষধর। উত্তরা, বনশ্রী, আফতাবনগর, মোহাম্মদপুর, নিকেতনসহ বিভিন্ন এলাকায় এসব ঘটনা ঘটছে। সবচেয়ে বেশি দেখা মিলছে পদ্মগোখরা বা মনোকেল্ড কোবরার, যাদের প্রজননকাল অক্টোবর মাসে।
বিএডব্লিউএর আহ্বায়ক আদনান আজাদ জানান, রাতে সবচেয়ে বেশি রেসকিউ কল আসে। অনেক সময় ভবনের নবম তলা থেকেও সাপ উদ্ধার করতে হয়। জলাশয় ভরাট, ঘিঞ্জি ভবন ও উচ্ছিষ্ট খাবারের কারণে ইঁদুর বাড়ছে, আর ইঁদুরের পিছু নিয়েই আসছে সাপ।
সংস্থাটি নাগরিকদের সতর্ক থাকতে পরামর্শ দিয়েছে—বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার রাখা, খাবারের উচ্ছিষ্ট যত্রতত্র না ফেলা, অন্ধকার জায়গায় নজর রাখা এবং সাপ দেখা গেলে রেসকিউ টিমে খবর দেওয়া।
তবে উদ্বেগের বিষয়, রাজধানীর খুব অল্প কয়েকটি হাসপাতালে সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসা ও অ্যান্টিভেনম রয়েছে। প্রাণিবিজ্ঞানীরা বলছেন, সাপ প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষাকারী প্রাণী; কিন্তু নগরায়ণের কারণে আশ্রয় হারিয়ে মানুষের বাসায় ঢুকে পড়ছে। পরিকল্পিত নগরায়ণ ও সচেতনতা বাড়ালেই এই বিপদ কমানো সম্ভব।
মন্তব্য করুন: