 
                                                                        
                                    পৃথিবীর বনভূমি শুধু পরিবেশের “ফুসফুস” নয়, বরং এক অর্থে মানবজাতির “রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা”ও। কিন্তু গাছ কাটা, কৃষি ও পশুচারণের জন্য ভূমি দখল, এবং সয়াবিন ও পাম অয়েল চাষের বিস্তারে দ্রুত বিলীন হচ্ছে বনভূমি। এই ধ্বংসযজ্ঞ শুধু জীববৈচিত্র্য নয়, মহামারি প্রতিরোধে আমাদের প্রাকৃতিক সুরক্ষাকেও বিপন্ন করছে।
বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলছেন, বন ধ্বংসের ফলে মানুষ ও বন্যপ্রাণীর সংস্পর্শ বেড়ে যাচ্ছে, যার ফলে জুনোটিক রোগ, অর্থাৎ প্রাণিজ উৎস থেকে মানুষের মধ্যে ছড়ানো ভাইরাস এর ঝুঁকি বহুগুণে বাড়ছে। ১৯৪০ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত মানুষের মধ্যে শনাক্ত নতুন ৩৩৫টি রোগের ৭২ শতাংশই বন্যপ্রাণী থেকে এসেছে।
বিশেষ করে আফ্রিকার কঙ্গো বেসিন অঞ্চল এখন সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। গবেষণা অনুযায়ী, গত ২০ বছরে কঙ্গোতে বন উজাড়ের হার তিনগুণ বেড়েছে, আর একই সময়ে জুনোটিক রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে ৬৩ শতাংশ।
বনভূমি টুকরো হয়ে গেলে প্রজাতির বৈচিত্র্য নষ্ট হয়, কিন্তু বাদুড় ও ইঁদুরের মতো কিছু প্রাণী টিকে যায় এবং মানুষের কাছাকাছি চলে আসে। এদের মাধ্যমেই ভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা বাড়ে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এসব প্রাণীর চলাচলও বেড়ে যাওয়ায় আগামী ৫০ বছরে ১৫ হাজার ভাইরাস নতুন প্রাণী প্রজাতিতে ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তবে আশার খবরও আছে। বন গবেষক পাউলা প্রিস্ট দেখিয়েছেন, ব্রাজিলের বন পুনরুদ্ধার করলে হান্টা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি অর্ধেকে নামানো সম্ভব। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিকল্পিতভাবে বন পুনরুদ্ধার ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা গেলে ভবিষ্যতের মহামারি রোধ করা সম্ভব।
মন্তব্য করুন: