[email protected] বৃহঃস্পতিবার, ১ মে ২০২৫
১৮ বৈশাখ ১৪৩২

শেরপুরে বন্য হাতি ও মানুষের চলছে দীর্ঘ দ্বন্দ্ব


প্রকাশিত: ২০ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:১০ পিএম

শেরপুরে হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব: ফাইল ছবি

দীর্ঘ দ্বন্দ্ব চলমান রয়েছে শেরপুর জেলার সীমান্ত এলাকা জুড়ে হাতি-মানুষের মধ্যে । এই দ্বন্দ্বে গত এক দশকে হাতির আক্রমণে শিশুসহ ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে প্রায় দুই শতাধিক মানুষ। অপরদিকে, গর্তে পড়ে কিংবা মানুষের তৈরি বৈদ্যুতিক ফাঁদে আটকে ২৯টি হাতির মৃত্যু হয়েছে।

 

গারোপাহাড়ি অঞ্চলে মানুষ ও হাতির এই দ্বন্দ্বের অবসান কীভাবে হবে-সে পথ খুঁজে পাচ্ছে না সংশ্লিষ্টরা।

বিভিন্ন তথ্যের মাধ্যমে জানা যায়, ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পাহাড় থেকে ১৯৯৫ সালে দলছুট হয়ে ২০-২৫টি হাতি গারো পাহাড়ে প্রবেশ করে। সেই থেকে বন্যহাতিগুলো শেরপুর সীমান্ত অঞ্চল নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবর্দী উপজেলাসহ হালুয়াঘাটে বসবাস করে আসছে। একসময় এই অঞ্চলে বিশাল এলাকা জুড়ে শাল ও গজারি বন ছিল। তখন বন্যপ্রাণিদের খাবারেরও অভাব ছিল না। কিন্তু এক সময় বন পরিষ্কারের মাধ্যমে সামাজিক বনায়ন শুরু হয়। শত শত একর জমিতে চাষাবাদও আরম্ভ হয়। গড়ে উঠে মানুষের বসতি। তখনই হাতিদের বিচরণ ক্ষেত্র কমে গেলে দেখা দেয় খাদ্যাভাব। খাদ্যের অভাবে হাতির দল বন থেকে বেরিয়ে লোকালয়ে আসতে থাকে। শুরু হয় হাতি ও মানুষের সংঘাত। 

বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের তথ্য মতে, গারোপাহাড়ে এখন কমপক্ষে ৬০-৭০টির অধিক হাতি রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে হাতি সংখ্যা আরও অনেক বেশি হবে। ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, বনে এখন খাদ্যের সংকট থাকায় ক্ষুধার্ত বন্যহাতি পাল দল বেঁধে লোকালয়ে এসে দিনে-রাত হানা দিচ্ছে। 

তাদের অভিযোগ-বাড়িঘর ভাঙচুর ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতি আর প্রাণহানি হলে বনবিভাগ থানায় জিডি করার পরামর্শ দিয়েই দায় সারছে। ক্ষতিপূরণ আদায়েও পোহাতে হয় নানা ভোগান্তি। বন্যহাতি দ্বারা নিহত পরিবারকে বনবিভাগ ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৩ লাখ টাকা, আহতদের চিকিৎসার জন্য ১ লাখ টাকা, ফসলের ক্ষতি হলে ৫০ হাজার টাকা করে দিচ্ছে। তবে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে এই ক্ষতিপূরণ পাওয়া নিয়েও শঙ্কা রয়েছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনিরুল এইচ খানের মতে, হাতি রক্ষায় প্রথমে হাতির প্রাকৃতিক আবাসস্থলগুলো সুরক্ষিত করতে হবে। যেসব জায়গায় হাতি চলাচল করে সেসব জায়গায় মানুষের বসতি কমিয়ে মসলা জাতীয় ফসলের চাষ করতে হবে।

 

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর